Tuesday, 26 February 2019

গাজওয়াতুল হিন্দ [শাহ নেয়ামাতুল্লাহ রহঃ]



#শাহ_নেয়ামাতুল্লাহ রহঃ এর ভবিষ্যৎবাণী ।। বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং গাজওয়াতুল হিন্দ

.

আল্লাহ প্রদত্ত ইলহাম এর জ্ঞান দ্বারা আজ থেকে প্রায় সাড়ে আটশত বছর পূর্বে (হিজরী ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে) শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহঃ তার বিখ্যাত কাব্যগুলো রচনা করেন। আল্লাহর অনেক প্রিয় বান্দাগণ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে গায়েবের বিষয় সম্পর্কে ইলহাম পেয়ে থাকেন। মনে রাখতে হবে যে, কোন সৃষ্টি জীবের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই যে, সে ইচ্ছা করলেই গায়েবের বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে এই জ্ঞান দান করে থাকেন। উপমহাদেশের ইলমী জনক শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহঃ তার ইলহামী ইলম দিয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ সাওয়াতিউল ইলহাম রচনা করেন। অনুরূপ হযরত শাহ নেয়ামতউল্লাহ রহঃ তার ইলহামী জ্ঞানের কিছু অংশ একটি কবিতায় প্রকাশ করেছেন। এটি লিখার পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিটি ভবিষ্যৎবাণী হুবহু মিলে গিয়েছে। কবিতার ৩৭ নং প্যারা থেকে বিশেষভাবে খেয়াল করুন। কারণ এর পূর্বের লাইনগুলো অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাওয়ায় শুধুমাত্র বর্তমান ও ভবিষতে কি ঘটতে পারে এটাই আমাদের দেখার বিষয়। কিছুটা দীর্ঘ হলেও ধৈর্য সহকারে পড়লে “গাজওয়াতুল হিন্দ” সম্পর্কে একটি ভাল ধারণা পাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।

.

আমাদের দূর্ভাগ্যই বলা চলে, পাকিস্তানি মুসলিম ভাইদের মাঝে কাসীদাগুলো বেশ পরিচিত, প্রসিদ্ধ এবং সমাদৃত অথচ বাংলাদেশে এ সম্পর্কে আমাদের কোনো জ্ঞানই নেই। কবিতাটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত “কাসিদায়ে সাওগাত” বইতে পাবেন। এই ছাড়াও মদিনা পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত “মুসলিম পুনঃজাগরণ প্রসঙ্গ ইমাম মাহদি” বইতেও পাবেন। যারা উর্দু বুঝেন তারা এই নিয়ে ৮ পর্বের সিরিজ আলোচনা শুনতে পারেন, পাকিস্তানী বিশেষজ্ঞ জায়েদ হামিদ খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা সহকারে উনার সকল ভবিষ্যৎবাণী (ইলহাম) তুলে ধরেছেন। বাংলা ভাষায় রুহুল আমীন খান অনূদিত শাহ নিয়ামতুল্লাহ রহঃ এর একটি কবিতা ১৯৭০/৭১ এর দিকে এদেশে প্রকাশিত হয়েছিল। নতুন ব্যাখ্যা সংযোজন ও পুনঃসম্পাদন করে নিম্নে তা দেয়া হলঃ

.

১)

পশ্চাতে রেখে এই ভারতের অতীত কাহিনী যত

আগামী দিনের সংবাদ কিছু বলে যাই অবিরত

.

ব্যাখ্যাঃ ভারত = ভারতীয় উপমহাদেশ

.

২)

দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে তুর্কী মুঘলদের

কিন্তু শাসন হইবে তাদের অবিচার যুলুমের

.

ব্যাখ্যাঃ দ্বিতীয় দাওর = ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের দ্বিতীয় অধ্যায়। শাহবুদ্দীন মুহম্মাদ ঘোরী রহিমাহুল্লাহ উনার আমল (১১৭৫ সাল) থেকে সুলতান ইব্রাহীম লোদীর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) পর্যন্ত প্রথম দাওর। এবং সম্রাট বাবর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) থেকে ভারতে মুসলিম দ্বিতীয় দাওর।

.

৩)

ভোগে ও বিলাসে আমোদে-প্রমোদে মত্ত থাকিবে তারা

হারিয়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা তুর্কী স্বভাব ধারা

.

ব্যাখ্যাঃ মুঘল শাসকদের অনেকই আল্লাহ ওয়ালা ছিলেন। তবে কেউ কেউ প্রকৃত ইসলামী আইন কানুন ও শরীয়তের আমল থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন।

.

৪)

তাদের হারায়ে ভিন দেশী হবে শাসন দণ্ডধারী

জাকিয়া বসিবে, নিজ নামে তারা মুদ্রা করিবে জারি

.

ব্যাখ্যাঃ ভিন দেশী = ইংরেজদের বোঝানো হয়েছে

.

৫)

এরপর হবে রাশিয়া জাপানে ঘোরতর এক রণ

রুশকে হারিয়ে এ রণে বিজয়ী হইবে জাপানীগণ

.

৬)

শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে মিলিয়া উভয় দল

চুক্তিও হবে কিন্তু তাদের অন্তরে রবে ছল

.

ব্যাখ্যাঃ বিশ শতকের প্রারম্ভে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জাপান কোরিয়ার উপর আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পীত সাগর, পোট অব আর্থার ও ভলডিভস্টকে অবস্থানরত রুশ নৌবহরগুলো আটক করার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে রাশিয়া জাপানের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হয়।

.

৭)

ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ আকালিক দুর্যোগ

মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম হবে মহাদুর্ভোগ

.

ব্যাখ্যাঃ ১৮৯৮-১৯০৮ সাল পর্যন্ত ভারতে মহামারী আকারে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এতে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের জীবনাবসান হয়। ১৭৭০ সালে ভারতে মহাদূর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। বংগ প্রদেশে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ থেকে উদ্ভুত মহামারিতে এ প্রদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাণ হারায়।

.

৮)

এরপর পরই ভয়াবহ এক ভূকম্পনের ফলে

জাপানের এক তৃতীয় অংশ যাবে হায় রসাতলে

.

ব্যাখ্যাঃ ১৯৪৪ সালে জাপানের টোকিও এবং ইয়াকুহামায় প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।

.

৯)

পশ্চিমে চার সালব্যাপী ঘোরতর মহারণ

প্রতারণা বলে হারাবে এ রণে জীমকে আলিফগণ

.

ব্যাখ্যাঃ ১৯১৪-১৯১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরাধিকাল ধরে ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। জীম = জার্মানি এবং আলিফ = ইংল্যান্ড।

.

১০)

এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে অতীব ভয়ঙ্কর

নিহত হইবে এতে এক কোটি ত্রিশ লাখ নারী-নর

.

ব্যাখ্যাঃ ব্রিটিশ সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রথম মহাযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ লোক মারা যায়।

.

১১)

অতঃপর হবে রণ বন্ধের চুক্তি উভয় দেশে

কিন্তু তা হবে ক্ষণভঙ্গুর টিকিবে না অবশেষে

.

ব্যাখ্যাঃ ১৯১৯ সালে প্যারিসের ভার্সাই প্রাসাদে প্রথম মহাযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে “ভার্সাই সন্ধি” হয় কিন্তু তা টিকেনি।

.

১২)

নিরবে চলিবে মহাসমরের প্রস্তুতি বেশুমার

জীম ও আলিফে লড়াই ঘটিবে বারংবার

.

১৩)

চীন ও জাপানে দু’দেশ যখন লিপ্ত থাকিবে রণে

নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি চালাবে সঙ্গোপনে

.

ব্যাখ্যাঃ নাসারা মানে খ্রিষ্টান

.

১৪)

প্রথম মহাসমরের শেষে একুশ বছর পর

শুরু হবে ফের আরো ভয়াবহ দ্বিতীয় সমর

.

ব্যাখ্যাঃ ১ম মহাযুদ্ধ সমাপ্তি হয় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সূচনা হয় ১৯৩৯ সালে ৩রা সেপ্টেম্বর। দুই যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময় প্রায় ২১ বছর।

.

১৫)

হিন্দ বাসী এই সমরে যদিও সহায়তা দিয়ে যাবে

তার থেকে তারা প্রার্থিত কোন সুফল নাহিকো পাবে

.

ব্যাখ্যাঃ ভারতীয়রা ব্রিটিশ সরকারের প্রদত্ত যে সকল আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে তাদের সহায়তা করেছিল, যুদ্ধের পর তা বাস্তবায়ন করে নি।

.

১৬)

বিজ্ঞানীগণ এ লড়াইকালে অতিশয় আধুনিক

করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ হাতিয়ার আনবিক

.

ব্যাখ্যাঃ মূল কবিতায় ব্যবহৃত শব্দটি হচ্ছে “আলোতে বকর” যার শাব্দিক অর্থ বিদ্যুৎ অস্ত্র। অনুবাদক বিদ্যুৎ অস্ত্রের পরিবর্তে আনবিক অস্ত্র তরজমা করেছেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে আমেরিকা হিরোসিমা নাগাসাকিতে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এতে লাখ লাখ বেসামরিক লোক নিহত হয়। কবিতায় বিদ্যুৎ অস্ত্র বলতে মূলত আনবিক অস্ত্রই বুঝানো হয়েছে।

.

১৭)

গায়েবী ধ্বনির যন্ত্র বানাবে নিকটে আসিবে দূর

প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে প্রতীচীর গান সুর

.

ব্যাখ্যাঃ গায়েবী ধ্বনির যন্ত্র রেডিও এবং টিভি

.

১৮)

মিলিত হইয়া “প্রথম আলিফ” “দ্বিতীয় আলিফ” দ্বয়

গড়িয়া তুলিবে রুশ চীন সাথে আতাত সুনিশ্চয়

.

১৯)

ঝাপিয়ে পড়িবে “তৃতীয় আলিফ” এবং দু জীম ঘাড়ে

ছুড়িয়া মারিবে গজবী পাহাড় আনবিক হাতিয়ারে

অতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতম ধ্বংসযজ্ঞ শেষে

প্রতারণা বলে প্রথম পক্ষ দাড়াবে বিজয়ী বেশে

.

ব্যাখ্যাঃ প্রথম আলিফ = ইংল্যান্ড, দ্বিতীয় আলিফ = আমেরিকা, তৃতীয় আলিফ = ইটালি এবং দুই জীম = জার্মানি ও জাপান।

.

২০)

জগৎ জুড়িয়া ছয় সাল ব্যাপী এই রণে ভয়াবহ

হালাক হইবে অগণিত লোক ধন ও সম্পদসহ

.

ব্যাখ্যাঃ জাতিসংঘের হিসাব মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি লোক মারা গিয়েছিল।

.

২১)

মহাধ্বংসের এ মহাসমর অবসানে অবশেষে

নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া চলে যাবে নিজ দেশে

কিন্তু তাহারা চিরকাল তরে এদেশবাসীর মনে

মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ বুনে যাবে সেই সনে

.

ব্যাখ্যাঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে আর ভারত উপমহাদেশ থেকে নাসারা তথা ইংরেজ খ্রিস্টানরা চলে যায় ১৯৪৭ এ। এই প্যারার দ্বিতীয় অংশের ব্যাখ্যা দুই রকম আছে।

ক) এই অঞ্চলের বিভেদ তৈরী করার জন্য ইংরেজ খ্রিস্টানরা কাশ্মীরকে হিন্দুদের দিয়ে প্যাচ বাধিয়ে যায়।

খ) ইংরেজরা চলে গেলেও তাদের সংস্কৃতি এমনভাবে রেখে গেছে যে, এই উপমহাদেশের লোকজন এখনও সব যায়গায় ব্রিটিশ নিয়ম-কানুন ভাষা সংস্কৃতি অনুসরণ করে।

.

২২)

ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ শঠতায় নেতাদের

মহাদূর্ভোগ দূর্দশা হবে দু’দেশেরই মানুষের

.

ব্যাখ্যাঃ দেশভাগের সময় মুসলমানরা আরো অনেক বেশি এলাকা পেত। কিন্তু সেই সময় অনেক মুসলমান নেতার গাদ্দারির কারণে অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হিন্দুদের অধীনে চলে যায়। ফলে কষ্টে পরে সাধারণ মুসলমানরা। এখনও ভারতের মুসলমানরা সেই গাদ্দারির ফল ভোগ করছে।

.

২৩)

মুকুটবিহীন নাদান বাদশা পাইবে শাসনভার

কানুন ও তার ফর্মান হবে আজেবাজে একছার

.

ব্যাখ্যাঃ এই প্যারা থেকে ভারত বিভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরা যায়। এই সময় এই অঞ্চলে মুসলিমদের ঝান্ডাবাহী কোন সরকার আসে নি। মুকুটবিহীন নাদান বাদশাহ বলতে অনেকে গণতন্ত্রকে বুঝিয়েছে। আব্রাহাম লিংকনের তৈরী গণতন্ত্রকে জনগণের তন্ত্র বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে জন-নিপীড়নের তন্ত্র। এই গণতন্ত্রের নিয়ম কানুন যে আজেবাজে সে সম্পর্কে শেষ লাইনে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

.

২৪)

দুর্নীতি ঘুষ কাজে অবহেলা নীতিহীনতার ফলে

শাহী ফর্মান হবে পয়মাল দেশ যাবে রসাতলে

.

ব্যাখ্যাঃ সমসাময়িক দুর্নীতি বুঝানো হয়েছে।

.

২৫)

হায় আফসোস করিবেন যত আলেম ও জ্ঞানীগণ

মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা করিবে আস্ফালন।

.

২৬)

পেয়ারা নবীর উম্মতগণ ভুলিবে আপন শান

ঘোরতর পাপ পঙ্কিলতায় ডুবিবে মুসলমান

.

২৭)

কালের চক্রে স্নেহ-তমীজের ঘটিবে যে অবসান

লুণ্ঠিত হবে মানী লোকদের ইজ্জত সম্মান

.

২৮)

উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার হালাল ও হারামের

লজ্জা রবে না, লুণ্ঠিত হবে ইজ্জত নারীদের

.

২৯)

পশুর অধম হইবে তাহারা ভাই-বোনে, মা-বেটায়

জেনা ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত পিতা আর কন্যায়

.

৩০)

নগ্নতা আল অশ্লীলতায় ভরে যাবে সব গেহ

নারীরা উপরে সেজে রবে সতী ভেতরে বেচিবে দেহ

.

৩১)

উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে পাপের বেসাতি পুরা

নারী দেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা ইবলিস বন্ধুরা

.

৩২)

নামায ও রোজা, হজ্জ্ব যাকাতের কমে যাবে আগ্রহ

ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা দারুন দূর্বিষহ

.

৩৩)

কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ

খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ

.

৩৪)

পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা ও নগ্নতা বেহায়ামি

ডোবাবে তোদের, খোদার কঠোর গজব আসিবে নামি

.

৩৫)

ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে

হবে নাজেহাল, ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে রক্তপাতে

.

৩৬)

মুসলমানের জান-মাল হবে খেলনা মুল্যহত

রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর স্রোতের মত

.

৩৭)

এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব কেন্দ্রের

ধন সম্পদ আসিবে তাদের দখলে মুমিনদের

.

ব্যাখ্যাঃ এখানে পাঞ্জাব কেন্দ্রের বলতে কাশ্মীর মনে করা হয়। গাজওয়াতুল হিন্দ অর্থাৎ হিন্দুস্তানের যুদ্ধের পূর্বে মুসলিমরা সর্বপ্রথম ভারতের কাছ থেকে একটি এলাকা দখল করে নেবে। আশা করা যায়, এটা হচ্ছে পাকিস্তান সীমান্তলগ্ন পাঞ্জাব ও জম্মু কাশ্মীর এলাকা। কারণ কাশ্মীরের স্থানীয় মুজাহিদ, আল কায়েদা, তালেবান সহ আরো অনেক জিহাদি গ্রুপ ব্যাপক আকারে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে জম্মু কাশ্মীরকে ভারতের দখল থেকে মুক্ত করার জন্য।

.

৩৮)

অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের

তাহাদের ধনসম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের

.

৩৯)

হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি

ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন আহাজারি

.

ব্যাখ্যাঃ ৩৮ ও ৩৯ নং প্যারায় বলা হয়েছে, মুসলিমরা যখন কাশ্মীর দখল করে নেবে তারপরই হিন্দুরা মুসলিমদের একটি এলাকা দখলে নেবে এবং সেখানে ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। মুসলমানদের ধন-সম্পদ ভারতের হিন্দু মুশরিকরা লুটপাটের মাধ্যমে নিয়ে নেবে, মুসলিমদের ঘরে ঘরে কারবালার ন্যায় রূপধারণ করবে। কিন্তু আপনি কি জানেন মুসলিমদের যে দেশটা ভারতের হিন্দুরা দখলে নিয়ে এ ধরনের হত্যা ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে সেটা কোন দেশ? ধারণা করা হয় সেটি আপনার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। অর্থাৎ মুসলিমরা কাশ্মীর জয় করার পর হিন্দুরা বাংলাদেশ দখল করবে। পরবর্তী প্যারাগুলো পড়লে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে ইনশা আল্লাহ।

.

৪০)

মুসলিম নেতা অথচ বন্ধু কাফেরের তলে তলে

মদদ করিবে অরি কে সে এক পাপ চুক্তির ছলে

.

ব্যাখ্যাঃ বর্তমান সময়ে এই উপমহাদেশে এ ধরনের নেতার অভাব নেই। যারা উপর দিয়ে মুসলমানদের নেতা সেজে থাকে কিন্তু ভেতর দিয়ে কাফিরদের এক নম্বর দালাল। সমগ্র ভারত উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানে এর যথেষ্ট উদাহরণ আছে যেখানকার নেতারা নামধারী মুসলিম হবে কিন্তু গোপনে গোপনে হিন্দুবান্ধব হবে। মুসলিমদের ধ্বংস করার জন্য ভারত সরকাররের সাথে গোপনে পাপ চুক্তি করবে।

.

৪১)

প্রথম অক্ষরে থাকিবে শীনে’র অবস্থান

শেষের অক্ষরে থাকিবে নূন ও বিরাজমান

ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের

ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক জালিম হিন্দুদের

.

ব্যাখ্যাঃ ইসলাম ধ্বংসকারী এই মুনাফিক শাসককে চেনার উপায় হল তার নামের প্রথম অক্ষর হবে আরবি অক্ষর শীন অর্থাৎ বাংলা অক্ষর “শ” এবং শেষের অক্ষর হবে আরবি অক্ষর নুন অর্থাৎ বাংলা অক্ষর “ন”। কেউ কেউ বলেন হতে পারেন তিনি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী (আল্লাহ ভালো জানেন)। আর এসব ঘটনা ঘটবে দুই ঈদের মাঝে। যেটা হতে পারে আগামী ঈদ কিংবা এর পরবর্তী বছরের ঈদ। প্রিয় ভাইয়েরা একটু কল্পনা করুন, এদেশে যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী ঢুকে আপনার পিতা, আপনার ভাই ও আত্মীয় স্বজনদের নির্মমভাবে হত্যা করবে, আপনার মা বোনদের ধর্ষণ করবে তখন কি অবস্থা হবে আপনার? আপনি ভেবেছেন কি আপনার সাজানো সংসার, আপনার চাকুরী, আপনার ব্যবসার ভবিষ্যৎ কি? সময় খুব অল্প। তাই হিন্দু মালাউনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতি নিন। এছাড়া আর কোন পথ নেই।

.

৪২)

মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ

ঝঞ্ঝার বেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ

.

৪৩)

সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া প্রচণ্ড আলোড়ন

“উসমান” এসে নিবে জিহাদের বজ্র কঠিন পণ

.

৪৪)

সাহেবে কিরান “হাবীবুল্লাহ” হাতে নিয়ে শমসের

খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধে

.

ব্যাখ্যাঃ এখানে মুসলিমদের সেনাপতির কথা বলা হয়েছে। শনি ও বৃহস্পতি গ্রহ অথবা শুক্র ও বৃহস্পতি গ্রহের একই রৈখিক কোণে অবস্থানকালীন সময়ে যে যাতকের জন্ম অথবা এ সময়ে মাতৃগর্ভে যে যাতকের ভ্রুনের সঞ্চার ঘটে তাকে বলা হয় সাহেবে কিরান বা সৌভাগ্যবান। সেই মহান সেনাপতির নাম বা উপাধি হবে “হাবীবুল্লাহ”।

.

৪৫)

কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর গাজীদের পদভারে

ভারতের পানে আগাইবে তারা মহারণ হুঙ্কারে

.

ব্যাখ্যাঃ আক্রমণকারীরা ভারত উপমহাদেশের হিন্দু দখলকৃত এলাকার বাইরে থাকবে এবং হিন্দু দখলকৃত এলাকা দখল করতে হুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে যাবে।

.

৪৬)

পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব “গাজীয়ে দ্বীন”

যুদ্ধে জিতিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন উড্ডিন

.

৪৭)

মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান

বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবে হিন্দুস্তান

.

ব্যাখ্যাঃ হিন্দুস্তান সম্পূর্ণরূপে মুসলমানদের দখলে আসবে।

.

৪৮)

বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ঈমানের দুশমন

অঝোর ধারায় হবে আল্লাহ’র রহমাত বরিষান

.

৪৯)

দ্বীনের বৈরী আছিল শুরুতে ছয় হরফেতে নাম

প্রথম হরফ গাফ সে কবুল করিবে দ্বীন ইসলাম

.

ব্যাখ্যাঃ ছয় অক্ষর বিশিষ্ট একটি নাম যার প্রথম অক্ষরটি হবে “গাফ” এমন এক প্রভাবশালী হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম পক্ষে যোগদান করবেন। তিনি কে তা এখনো বুঝা যাচ্ছে না।

.

৫০)

আল্লাহ’র খাস রহমাতে হবে মুমিনেরা খোশদিল

হিন্দু রসুম রেওয়াজ এ ভূমে থাকিবে না এক তিল

.

ব্যাখ্যাঃ ভারতবর্ষে হিন্দু ধর্ম তো দূরে হিন্দুদের কোন রসম রেওয়াজও থাকবে না।

.

৫১)

ভারতের মত পশ্চিমাদেরও ঘটিবে বিপর্যয়

তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে ঘটাইবে মহালয়

.

ব্যাখ্যাঃ বর্তমান সময়ে স্পষ্ট সেই তৃতীয় সমরের প্রস্তুতি চলছে। অর্থ্যাৎ সমগ্র বিশ্ব জুড়ে মুসলমাদের বিরুদ্ধে কাফিররা যুদ্ধ করছে তথা জুলুম নির্যাতন করছে। এই জুলুম নির্যাতনই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধে রূপ নিয়ে এক সময় তাদের ধ্বংসের কারণ হবে। এখানে বলা হচ্ছে মহালয় বা কিয়ামত শুরু হবে যাতে পশ্চিমারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।

.

৫২)

এ রণে হবে “আলিফ” এরূপ পয়মাল মিসমার

মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার

.

ব্যাখ্যাঃ এ যুদ্ধের কারণে আলিফ = আমেরিকা এরূপ ধ্বংস হবে যে, ইতিহাসে শুধু তার নাম থাকবে কিন্তু বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব থাকবে না। বর্তমানে মুছে যাওয়ার আগাম বার্তা স্বরূপ দেশটিতে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং অর্থনৈতিক মন্দা চরমভাবে দেখতে পাচ্ছি।

.

৫৩)

যত অপরাধ তিল তিল করে জমেছে খাতায় তার

শাস্তি উহার ভুগতেই হবে নাই নাই নিস্তার

কুদরতী হাতে কঠিন দণ্ড দেয়া হবে তাহাদের

ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা দাড়াবে না কভু ফের

.

৫৪)

যেই বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিল আপন কামে

নিপাতিত শেষ কালে সে নিজেই জাহান্নামে

.

৫৫)

রহস্যভেদী যে রতন হার গাথিলাম আমি তা, যে

গায়েবী মদদ লভিতে, আসিবে উস্তাদসম কাজে।

.

৫৬)

অতি সত্বর যদি আল্লাহ’র মদদ পাইতে চাও

তাহার হুকুম তালিমের কাজে নিজেকে বিলিয়ে দাও

.

ব্যাখ্যাঃ বর্তমানে সমস্ত ফিতনা হতে হিফাযত হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে সমস্ত হারাম কাজ থেকে খাস তওবা করা। সেটা হারাম আমল হোক কিংবা কাফের মুশরিক প্রণীত বিভিন্ন নিয়ম কানুন হোক।

.

৫৭)

“কানা জাহুকার” প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত

ইমাম মাহদি দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত

.

ব্যাখ্যাঃ “কানা জাহুকা” সূরা বনী ইসরাইলের ৮১ নং আয়াতের শেষ অংশ। যার অর্থ মিথ্যার বিনাশ অনিবার্য। পূর্ব আয়াতটির অর্থ “সত্য সমাগত মিথ্যা বিলুপ্ত”। অর্থাৎ যখন মিথ্যার বিনাশ কাল উপস্থিত হবে তখন উপযুক্ত সময়েই আবির্ভূত হবেন “ইমাম মাহদি”। উনার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে বাতিল ধ্বংস হবে।

.

৫৮)

চুপ হয়ে যাও ওহে নেয়ামত এগিও না মোটে আর

ফাঁস করিও না খোদার গায়বী রহস্য আসরার

এ কাসিদা বলা করিলাম শেষ “কুনুত কানয” সালে

অদ্ভুত এই রহস্য গাঁথা ফলিতেছে কালে কালে

.

ব্যাখ্যাঃ “কুনুত কানয” সাল অর্থাৎ হিজরি সন ৫৪৮ মোতাবেক ১১৫৮ ইংরেজি সাল হচ্ছে এ কাসিদার রচনা কাল। এটা আরবি হরফের নাম অনুযায়ী সাংকেতিক হিসাব।

#কপি_পেষ্ট


EmoticonEmoticon